প্রশ্নঃ 1
if my hindu classmade says subhabijaya happy dewali etc than what can I do? if I am saying same to you though it is not from heart only for friendship, is it jayej?
25 Dec 2025
না, এর উত্তর কোন অযুহাতেই এভাবে দেয়া যাবে না। আপনি কিছুই বলবেন না অথবা বলবেন আপনি ভাল থাকুন এজাতীয় শব্দ।
প্রশ্নঃ 2
মুহতারাম। আস সালামু আলাইকুম। আমার প্রশ্নঃ আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে আপনি অবগত। এই অবস্থায় কোন মহিলা কি মুখ ও হাতের কবজি পর্যন্ত খোলা রেখে পুরুষের সাথে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকুরী করতে পারবে? এতে করে কি পর্দা রক্ষা হবে? এভাবে চাকুরী করা কি জায়েজ হবে? বিস্তারিত জানালে খুশী হবো।
23 Dec 2025
ওয়া আলাইকুমুস সালাম। একান্ত বাধ্য না হলে পুরুষদের মধ্যে কোনো অবস্থাতেই চাকরী করা ঠিক নয়। পোশাকের পর্দা ছাড়াও পর্দার একটি বড় দিক নারী পুরুষের একত্রে অবস্থান বর্জন করা। একান্ত বাধ্য হলেই শুধু নিজের পোশাকের পরিপূর্ণ পর্দাসহ চাকরী করবেন এবং সাথে সাথে পুরুষ সহকর্মীদের সাথে বা পাশে বসা ও তাদের সাথে খোশগল্প সম্পূর্ণ বর্জন করবেন। এরূপ গল্পগুজব ক্রমান্বয়ে অন্তর থেকে তাকওয়া দূর করে দেয়, এমনকি পারিবারিক জীবনও ভাল লাগে না; বরং কর্মস্থলে এসে গল্প করতেই অধিক ভাল লাগে। এগুলো মুমিন-মুমিনার জন্য অত্যন্ত কঠিন অবক্ষয়।
প্রশ্নঃ 3
বেহেশতিজেওর বই সমনধে ঝানতে চাই। এই বই এর 3 অংশে যে শব কাহীনি আছে এবং তাবিঝ আছে তাকি ভাল।
23 Dec 2025
বেহেশতি জেওর একটি প্রাথমিক ফিকহি কিতাব। সাধারণ মানুষদের জন্য এটা সংকলন করা হয়েছে।তাবিজের বিষয়ে জানতে দেখুন, রাহে বেলায়াত বইটির শেষ অধ্যায়।
প্রশ্নঃ 4
বাংলাদেশে মাদরাসা শিক্ষা এবং সাধারণ শিক্ষা পাঠক্রম: ইতিহাস এবং তুলনা artical banglata chai
23 Dec 2025
আমরা এখানে মাসআলা মাসায়েল বিষয়ে আলচনা করি। আর্টিকেল নয়। এই বিষয়ে একটি আরবী আর্টিকেল আছে পড়ে নিতে পারেন।
প্রশ্নঃ 5
about firka
23 Dec 2025
দেওবন্দি ফিরকা বলে কোন ফিরকা নেই। পাক-ভারত উপমহাদেশে কওমী মাদরাসা হিসেবে পরিচিত মাদারাসাগুলো ভারতের দেওবন্দ মাদরাসার আদর্শে পরিচালিত হয়। তাদের মধ্যে ভাল ও মন্দ থাকতে পারে। তবে সাধারণভাবে ভারতীয় উপমহাদের ইসলামী শিক্ষা ও দাওয়াতের তাদের অবদান সবচেয়ে বেশি।
প্রশ্নঃ 6
আমার সব গুলো প্রশ্নর দিলে খুশি হব সে বলে যদি চাকুরি হয় তাহলে অনেক যোগ্য মানুষকে চাকুরি দেয়ার চেষ্টা করবে ইনশাআল্লাহ বিনা ঘুষ নিয়ে এখানে শরীয়া কি বলে
23 Dec 2025
আপনার প্রশ্ন স্পষ্ট নয়। তবে মনে হচ্ছে আপনি আপনার নেক নিয়্যাতের বিষয়ে জানতে চেয়েছেন। এটা আপনার ভাল নিয়্যাত যে, আপনি চাকরী পেলে অন্যদেরকে বিনা ঘুষে চাকরী দেবেন।
প্রশ্নঃ 7
আসসালামু আলাইকুম। আমার দীঘ দিন ধরে চাকুরি খুজতে কিন্তু পাচ্ছে না। আর এ কারনে সে বিয়েও করছে না তাকে বাসা থেকে অনেকবার বিয়ের জন্য চাপ দেওয়া হয়েছে কিন্তু সে বিয়ে করে না বলে আগে চাকুরি পেয়ে নি তারপর বিয়ে কিন্তু তার কিছু মেয়ে বন্ধু আছে তাকে যিনার কথা বললে বলে বিয়ের সময় সব বন্ধ করে দিবে এখন আমার প্রশ্ন হল আমার ভাইকে চকুরির ব্যপারে কাউকে ঘুষ দিয়া কি ঠিক হবে কেননা সে তো যিনা ছাড়ছে না আর তার এই চকুরির ব্যাপারে কোনো রকম সাহায্য করা কি ঠিক হবে আর যদি সে ওই ঘুষের টাকা টা চাকুরির পর বিনা সওয়াবের আশায় দান করে দেয় তাহলে কি হবে?
23 Dec 2025
ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ। যিনার কাছে যেতেও কুরআনে নিষেধ করা হয়েছে। সুতরাং কোন ভাবেই যিনা বা ব্যাভিচারে লিপ্ত হওয়া যাবে না। ঘুষ নিয়ে চাকরীর বিষয়ে আমাদের দেয়া অন্য প্রশ্নের উত্তর দেখুন। অবৈধ টাকা সওয়াবের আশা না করে গরীবদেরকে দিয়ে দিতে হবে।
প্রশ্নঃ 8
আস্ সালামুআলাইকুম। আমরা কারো মৃত্যুতে শুনি এটাই তার হায়াত ছিল অর্থাৎ আল্লাহর ফয়সালা।
কিন্তু যারা আত্মহত্যা করেন তাদেরকে কেন জাহান্নামে নিক্ষেপের কথা বলা হয়েছে। তাহলে কি তাদের মৃত্যু আল্লাহর ফয়সালা নয়? ফয়সালা হলে কেনই বা তাকে শাস্তি দেওয়া হবে?
22 Dec 2025
অযুতে ঘাড় মাসেহ করার ব্যাপারে কোন সহীহ হাদীস পাওয়া যায় না। তবে কয়েকটি যয়ীফ হাদীসে এ বিষয়টি পাওয়া যায়। তাই এই বিষয়টিকে কোন কোন আলেম মুস্তাহাব বলেছেন, আবার কোন কোন আলেম বিদআত বলেছেন।
কুলি আর নাকে পানি এক সাথেও করা যায় আবার আালাদা আলাদাও করা যায়, দুই ধরনের হাদীসই আছে। আপনার যেভাবে সুবিধা হয় সেভাবে করবেন। আর ঘাড় মাসেহ করার ব্যাপারে কয়েকটি দূর্বল হাদীস বর্ণিত আছে। তার একটি হলো, قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: من توضأ ومسح عنقه لم غل بالأغلال يوم القيامة অর্থ: রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, যে ব্যক্তি ওযু করবে এবং ঘাড় মাসেহ করবে কিয়ামতের দিন তাকে শিকল পরানো হবে না। তারীখ আসবাহান, ১/২৪২। এই বিষয়ে বিভিন্ন হাদীসের বিশ্লেষন শেষে মোল্লা আলী কারী হানাফী রাহ. বলেন, قال أئمتنا إن مسح الرقبة مستحب أو سنة অর্থ: আমাদের ইমামগণ বলেছেন, ঘাড় মাসেহ করা মুস্তাহাব অথবা সুন্নাত। আল-আসরারুল মারফুয়াহ, পৃষ্ঠা- ৩১৫। কোন কোন আলেম বিদআত বলেছেন। তবে দলিলের আলোকে বিদআত নয় বলেই মনে হয়।
প্রশ্নঃ 9
ইস্তেগফারের নিয়ম
22 Dec 2025
আমাদের অনেকই এই أستغفر الله رب من كل ذنب, وأتوب إليه দিয়ে ইস্তেগফার করি । কিন্তু কিছুদিন পূর্বে এক আলেম সাহেব বলেন, এই ইস্তেগফার কোন হাদিসের কিতাবে নেই, এবং কেউ দেখাতে পারবেও না । জানার বিষয় হল তার কথা সঠিক কি না? জানিয়ে বাদিত করবেন। আমাদরে অনইে এই أستغفر الله رب من كل ذنب, وأتوب إليه দিয়ে ইস্তগেফার করি । কন্তিু কছিুদনি র্পূবে এক আলমে সাহবে বলনে, এই ইস্তগেফার কোন হাদসিরে কতিাবে নইে, এবং কউে দখোতে পারবওে না । জানার বষিয় হল তার কথা সঠকি কি না? জানযি়ে বাদতি করবনে। ইস্তিগফারের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বিষয় মুমিন-মনের উপলব্ধি। মানব মনের একটি অতি আকর্ষণীয় কাজ অন্যের অন্যায়গুলো বড় করে দেখা ও নিজের অন্যায়কে ছোট ও যুক্তিসঙ্গত বলে মনকে প্রবোধ দেওয়া। আমরা একাকী বা একত্রে যখনই চিন্তাভাবনা বা গল্প করি, তখনই সাধারণত অন্যের অন্যায়গুলো আলোচনা করি। মুমিনের আত্মিক জীবন ধ্বংসে এটি অন্যতম কারণ। মুমিনকে সদা সর্বদা নিজের পাপের কথা চিন্তা করতে হবে। এমনকি আল্লাহর অগণিত নিয়ামতের বিপরীতে তাঁর ইবাদতের দুর্বলতাকেও পাপ হিসাবে গণ্য করে সকাতরে সর্বদা আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে। সকল প্রকার পাপকে কঠিন, ভয়াবহ ও নিজের জীবনের জন্য ধ্বংসাত্মক বলে দৃঢ়তার সাথে বিশ্বাস করে বারবার ক্ষমা চাইতে হবে। এ পাপবোধ নিজেকে সংকুচিত করার জন্য নয়। এ পাপবোধ আল্লাহর কাছে ক্ষমা চেয়ে নিজেকে ভারমুক্ত, পবিত্র, উদ্ভাসিত ও আল্লাহর নৈকট্যের পথে এগিয়ে নেয়ার জন্য। আব্দুল্লাহ ইবনু মাসঊদ বলেছেন :
إِنَّ الْمُؤْمِنَ يَرَى ذُنُوبَهُ كَأَنَّهُ فِي أَصْلِ جَبَلٍ يَخَافُ أَنْ يَقَعَ عَلَيْهِ وَإِنَّ الْفَاجِرَ يَرَى ذُنُوبَهُ كَذُبَابِ وَقَعَ عَلَى أَنْفِهِ فَقَالَ لَهُ هكَذَا فَطَارَ
মুমিন ব্যক্তি তাঁর পাপকে খুব বড় করে দেখেন, যেন তিনি পাহাড়ের নিচে বসে আছেন, ভয় পাচ্ছেন, যে কোনো সময় পাহাড়টি ভেঙ্গে তাঁর উপর পড়ে যাবে। আরা পাপী মানুষ তার পাপকে খুবই হালকাভাবে দেখেন, যেন একটি উড়ন্ত মাছি তার নাকের ডগায় বসেছে, হাত নাড়ালেই উড়ে যাবে। বুখারী (৮৩-কিতাবুদ দাআওয়াত, ৪-বাবুত তাওবাহ) ৫/২৩২৪ (ভারতীয় : ২/৯৩৩); তিরমিযী (৩৮-কিতাব সিফাতিল কিয়ামাহ, ১৫-বাব..সিফাত আওয়ানিল হাওয) ৪/৫৬৮ (ভা ২/৭৬)। হুহহু এই বাক্যে ইসতিগফার হাদীসে পাওয়া যায় না। তবে এই বাক্য দ্বারাও ইসতিগফার করা যাবে, কেননা মুমিন যে কোনো ভাষায় আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে পারেন। ভাষা বা বাক্যের চেয়ে মনের অনুশোচনা ও আবেগ বেশি প্রয়োজনীয়। তবে রাসূলুল্লাহ সা.-এর শেখানো বাক্য ব্যবহার করা উত্তম। সাধারণভাবে বিভিন্ন হাদীসে ইসতিগফারের জন্য আসতাগফিরুল্লাহ (আমি আল্লাহর নিকট ক্ষমা চাচ্ছি ) এবং কখনো এর সাথে ওয়া আতূবু ইলাইহি (এবং আমি তাঁর কাছে তাওবা করছি) বাক্য ব্যবহার করা হয়েছে। এখানে কয়েকটি মাসনূন বাক্য উল্লেখ করছি:
১। أَستَغْفِرُ اللهَ
উচ্চারণ: আস্তাগফিরুল্লা-হ। অর্থ: আমি আল্লাহর ক্ষমা প্রার্থনা করছি। সুনানু তিরমিযী, হাদীস নং ৩০০। হাদীসটি সহীহ। ২। أَسْتَغْفِرُ اللهَ وَأَتُوْبُ إِلَيْهِ
উচ্চারণ: আস্তাগফিরুল্লা-হা ওয়া আতূবু ইলাইহি। অর্থ : আমি আল্লাহর ক্ষমা প্রার্থনা করছি ও তাঁর দিকে ফিরে আসছি। সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১১৬। ৩। رَبِّ اغْفِرْ لِيْ وَتُبْ عَلَيَّ إِنَّكَ (أنْتَ) التَّوَّابُ الرَّحِيْمُ (الغَفُوْرُ)
উচ্চারণ : রাব্বিগ্ ফিরলী, ওয়া তুব আলাইয়্যা, ইন্নাকা আনতাত তাওয়া-বুর রাহীম। দ্বিতীয় বর্ণনয় রাহীম-এর বদলে: গাফূর। অর্থ: হে আমার প্রভু, আপনি আমাকে ক্ষমা করুন এবং আমার তাওবা কবুল করুন। নিশ্চয় আপনি মহান তাওবা কবুলকারী করুণাময়। দ্বিতীয় বর্ণনায়: তাওবা কবুলকারী ও ক্ষমাকারী। সুনানু ইবনে মাজাহ, হাদীস নং৩৮১৪; সুনানু তিরমিযী, হাদীস নং ৩৪৩৪। হাদীসটি সহীহ। ৩। (৩ বার)
أَسْتَغْفِرُ اللهَ (الْعَظِيْمَ) الَّذِيْ لاَ إلهَ إِلاَّ هُوَ الحَيُّ الْقَيُّوْمُ وَأَتُوْبُ إِلَيْهِ
উচ্চারণ : আসতাগফিরুল্লা-হাল্ (আযীমাল্) লাযী লা- ইলা-হা ইল্লা- হুআল হাইউল কাইঊমু ওয়া আতূবু ইলাইহি। অর্থ: আমি মহান আল্লাহর ক্ষমা প্রার্থনা করছি, যিনি ছাড়া কোনো মাবুদ নেই, তিনি চিরঞ্জীব ও সর্ব সংরক্ষক, এবং তাঁর কাছে তাওবা করছি। সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং ১৫১৭। হাদীসটি সহীহ। ৪। (সাইয়্যেদুল ইস্তিগফার)
اللَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّي لا إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ خَلَقْتَنِيْ وَأَنَا عَبْدُكَ وَأَنَا عَلَى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ أَعُوْذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ أَبُوءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَيَّ وَأَبُوءُ لَكَ بِذَنْبِيْ فَاغْفِرْ لِيْ فَإِنَّهُ لاَ يَغْفِرُ الذُّنُوْبَ إِلاَّ أَنْتَ
উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা, আনতা রাব্বী, লা- ইলা-হা ইল্লা- আনতা, খালাক্বতানী, ওয়াআনা আবদুকা, ওয়াআনা আলা- আহদিকা ওয়াওয়াঅ্দিকা মাস তাতাঅ্তু। আঊযু বিকা মিন শাররি মা- স্বানাতু, আবূউ লাকা বিনিমাতিকা আলাইয়্যা, ওয়াআবূউ লাকা বিযামবি। ফাগ্ফিরলী, ফাইন্নাহু লা- ইয়াগফিরুয যুনূবা ইল্লা- আনতা। অর্থ: হে আল্লাহ, আপনি আমার প্রভু, আপনি ছাড়া কোনো মাবুদ নেই। আপনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন এবং আমি আপনার বান্দা। আমি আপনার কাছে প্রদত্ত অঙ্গিকার ও প্রতিজ্ঞার উপরে রয়েছি যতটুকু পেরেছি। আমি আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করি আমি যে কর্ম করেছি তার অকল্যাণ থেকে। আমি আপনার কাছে প্রত্যাবর্তন করছি আপনি আমাকে যত নিয়ামত দান করেছেন তা-সহ এবং আমি আপনার কাছে প্রত্যাবর্তন করছি আমার পাপ-সহ। অতএব, আপনি আমাকে ক্ষমা করুন, আপনি ছাড়া কেউ পাপ ক্ষমা করতে পারে না। সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৬৩০৬। কুরআন কারীমে মুমিনগণকে বারবার তাওবা ও ইসতিগফার করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাওবা ও ইসতিগফারের জন্য ক্ষমা, পুরস্কার ও মর্যাদা ছাড়াও জাগতিক উন্নতি ও বরকতের সুসংবাদ প্রদান করা হয়েছে। অনুরূপভাবে বিভিন্ন হাদীসে ইসতিগফারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইসতিগফার আল্লাহর অন্যতম যিক্র। যিক্রের সাধারণ ফযীলত ইস্তিগফারকারী লাভ করবেন। এ ছাড়াও ইস্তিগফারের অতিরিক্ত মর্যাদা ও সাওয়াব রয়েছে। আবু হুরাইরা (রা) বলেন, রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন :
وَاللهِ إِنِّي لأَسْتَغْفِرُ اللهَ وَأَتُوبُ إِلَيْهِ فِي الْيَوْمِ أَكْثَرَ مِنْ سَبْعِينَ مَرَّةً
আল্লাহর কসম! আমি দিনের মধ্যে ৭০ বারেরও বেশি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই এবং তাওবা করি। বুখারী (৮৩-কিতাবুদ দাআওয়াত, ৩-বাব ইসতিগফারিন নাবিয়্যি) ৫/২৩২৪
প্রশ্নঃ 10
assalamualaikum warahmatullah ..., ami mosjide gele amake chilla zawar jonno bole ..unara bole tar kothar cheye kar kotha uttom hote pare ze manushke allaher dike ahoban kore... erpor bole 4-5 diner jonno amader shathe diner mehnote chole ashen ... abbu ammuke bole ashen ... ekhon ami jodi oderke bujhai dolil dei ora to shunbe na ... ami bolsilam ze ami online tablig kori ierf.com e... ekhon ami kivabe jukti diye uttor dibo? oderke bujhaite parbo na ...onek jon okhane pore amar piche lagbe ....kete ashte hobe
22 Dec 2025
আপনাকে ধন্যবাদ। আপনি নিঃসন্দেহ ভাল কাজ করছেন। তারা যা করছে তাও ভাল কাজ। আপনার যদি সময় সুযোগ হয় তাহলে তাদের সাথে দাওয়াতি কাজে অংশ নিবেন। যেতে না পারলে তাদেরকে বুঝিয়ে বলবেন।
প্রশ্নঃ 11
Assalamualaikum, Questions given here are my mothers 1. Im a diabetic patient, however sometimes when I walk in the road my body get touched with other people of the road and takes place not from my own will. Is there will be any gunah for it. 2. Can I go to any market wearing borkhah? If I go so will there be any gunah. 3. If anyone dies and arrange Ziafot and gives meat to eat will there be any gunah to eat that meat?
22 Dec 2025
ওয়া আলাইকুমুস সলাম ওয়া রহমাতুল্লাহ। ( ১) না। অনিচ্ছা সত্ত্বেও যদি এমন কখনো হয়ে যায় তাহলে গুনাহ হবে না। (২) হ্যাঁ। আপনি বোরকা পরে প্রয়োজনীয় যে কোন জায়াগায় যেতে পারবেন। (৩) মৃত ব্যক্তির সওয়াবের উদ্দেশ্যে খানা-পিনার আয়োজন করা বিদআত। সুতরাং এমন খানা-পিনা থেকে বিরত থাকা উচিৎ। তবে খেয়ে ফেললে আশা করা যায় গুনাহ হবে না।
প্রশ্নঃ 12
আস-সালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ জনাব আমি এক সেট বাংলায় অনুবাদিত বুখারী কিনতে চাই কোন প্রকাশনীর কিনলে ভাল হয় জানালে উপকৃত হবাে।
22 Dec 2025
ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ। আপনাকে ধন্যবাদ। ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে প্রকাশিত বুখারী শরীফের বাংলা অনুবাদ ক্রয় করুন।
প্রশ্নঃ 13
বাংলাদেশে প্রচলিত ফাতিহা, ওরশ, (সবে মেরাজ, সবে কদর) এর নামে তকবিরের মাধ্যমে খানা খাওয়া কি জায়েয?
20 Dec 2025
আপনাকে ধন্যবাদ। প্রচলিত ফাতিহা, ওরশ, সবে মেরাজ, সবে কদরের নামে খাওয়া দাওয়া সবই জঘন্য বানোয়াট ও খেলাফে সুন্নাত কাজ। সাহবী, তাবেয়ী, তাবে তাবেয়ী ও পূর্ববর্তী মুসলিমগণ কখনো মৃত্যু দিবস কিংবা জন্মদিবসে কোন অনুষ্ঠান আয়োজ করেননি, খাবার বিতরণ করেননি। এমন অনুষ্ঠানের খাবার গ্রহণ করার অর্থই হলো এই সুন্নাত বিরোধী কাজকে সহায়তা করা সুতরাং এমন খানা খাওয়া আমাদের বর্জন করতে হবে। বিস্তারিত জানতে পড়ুন, প্রফেসার ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর রচিত এহইয়াউস সুনান বইটি।
প্রশ্নঃ 14
কাউকে মুশরিক বলার অর্থ কি তাকে কাফিরও বলা? মুশরিক মাত্রই কি কাফির? শাসকের অন্যায় কাজের সমালোচনা করা কি জায়েজ?
20 Dec 2025
হ্যাঁ। কাউকে মুশরিক বলার অর্থ তাকে কাফেরও বলা। মুশরিক মাত্রই কাফের। বিষযটি নিচে বিস্তারিত আলোচনা হল। কুফ্র আরবী শব্দ। কুফ্র এর আভিধানিক অর্থ হলো অবিশ্বাস, অস্বীকার, অকৃতজ্ঞতা ইত্যাদি। ইসলামী পরিভাষায় আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের (স.) উপর এবং ঈমানের রুকনগুলোতে বিশ্বাস না থাকাকেই কুফর বলে। শিরক শব্দটিও আরবী। শিরক এর আভিধানিক অর্থ হলো অংশীদার করা বা বানানো, সহযোগী বানানো ইত্যদী। আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে আল্লাহর কোনো বিষয়ে আল্লাহর সমকক্ষ মনে করা বা আল্লাহর প্রাপ্য কোনো ইবাদত আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো জন্য পালন করা বা আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে ডাকাকে ইসলামী পরিভাষায় শিরক বলে। ইসলামী পবিভাষায় বিশ্বাসের অবিদ্যমানতাই কুফর বা অবিশ্বাস। আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের উপর এবং ঈমানের রুকনগুলিতে বিশ্বাস না থাকাকেই ইসলামের পরিভাষায় কুফর বলে গণ্য। অস্বীকার, সন্দেহ, দ্বিধা, হিংসা, অহংকার, ইত্যাদি যে কোন কারনে যদি কারো মধ্যে ঈমান বা দৃঢ় প্রত্যয়ের বিশ্বাস অনুপস্থিত থাকে তবে তাকে ইসলামী পরিভাষায় কুফর বলে গণ্য করা হয়। অনুরুপভাবে মহান আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে কোনো বিষয়ে তাঁর সমতুল বা সমকক্ষ বা তাঁর সাথে তুলনীয় বলে বলে বিশ্বাস করার মাধ্যমে আল্লাহর একত্ব ও অতুলনীয়ত্ব অস্বীকার করাও কুফর। তবে এ পর্যায়ের কুফরকে ইসলামের পরিভাষায় শিরক বলা হয়। কুফর ও শিরক পরস্পর অবিচ্ছ্যেভাবে জড়িত। কাউকে কোনোভাবে কোনো বিষয়ে মহান আল্লাহর সমকক্ষ বা তুলনীয় মনে করার অর্থই তাঁর একত্বে অবিশ্বাস বা কুফরী করা। আল্লাহর তাওহীদ ও রাসূলগণের দাওয়াতে অবিস্বাস না করে কেউ শিরক করতে পারে না। কাজেই মুশরিক মাত্রই কাফের বলে গণ্য হবে। অপরদিকে কাউকে আল্লাহর সমকক্ষ না মেনে ঈমানের কোনো রুকন অবিশ্বাস করলে তা শুধু কুফর বলে গণ্য। সুতরাং কাফের মাত্রই মুশরিক নয়। যেমন যদি কেউ আল্লাহর অস্তিত্বে বা তাঁর প্রতিপালনের একত্বে অবিশ্বাস করে বা মুহাম্মাদ (স.) এর রিসালাত, খাতমুন নবুওয়াত ইত্যাদি অস্বীকার করে তবে তা কুফ্র হলেও বাহ্যত তা শিরক নয়। কারণ এরুপ ব্যক্তি সুস্পষ্ট ভাবে কাউকে আল্লাহর সাথে তুলনীয় দাবি করছে না। তবে প্রকৃতপক্ষে এরুপ কুফরের সাথেও শিরক জড়িত। কারন এরুপ ব্যক্তি কোন না কোন ভাবে এ জড় বিশ্বকে মহান আল্লাহর মত অনাদি-অনন্ত বলে বিশ্বাস করছে, বিশ্ব পরিচালনায় প্রকৃতি বা অন্য কোন শক্তিকে বিশ্বাস করছে। উপরের আলোচনা থেকে স্পষ্ট যে, কাউকে মুশরিক বলার অর্থই হলো তাকে কাফেরও বলা। মুশরিক মাত্রই কাফের। তবে সকল কাফের সাধারণ ভাবে মুশরিক নয়। একটি কথা মনে রাখা জরুরী যে, কেউ কুফুরী কোন কাজ করলেই তাকে কাফের বলা যায় না। সমাজের অনেক মানুষই নিজেকে মুমিন ও তাওহীদে বিশ্বাসী বলে দাবি করার পরেও বিভিন্ন প্রকার শিরক ও কুফরের মধ্যে লিপ্ত থাকেন। এদের এ সকল কর্ম শিরক বা কুফর বলে আমরা নিশ্চিত জানার পরেও এদেরকে কাফির বা মুশরিক বলার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করা ইসলামের নির্দেশ। কোনো কর্মকে শিরক বা কুফর বলা এবং কোনো ব্যক্তিকে কাফের বা মুশরিক বলার মাঝে অনেক পার্থক্য রয়েছে। আব্দুল্লাহ ইবনে উমার রা. বলেন, রাসূল সা. বলেছেন, إِذَا كَفَّرَ الرَّجُلُ أَخَاهُ فَقَدْ بَاءَ بِهَا أَحَدُهُمَا যদি কোনো ব্যক্তি তার ভাইকে কাফের বলে,তবে এ কথা দুজনের একজনের উপর প্রযোয্য হবে। সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৬০। আবু জার রা. বলেন, রাসূল সা. বরেছেন,
مَنْ دَعَا رَجُلاً بِالْكُفْرِ أَوْ قَالَ عَدُوَّ اللَّهِ. وَلَيْسَ كَذَلِكَ إِلاَّ حَارَ عَلَيْهِ যদি কেউ কোন মানুষকে কুফুরির সাথে জড়িত করে আহহ্বান করে অথবা তাকে বলে হে আল্লাহর শত্রু আর সে তা না হয়, তবে তা বক্তার উপর বর্তবে। সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৬১
আরো বিস্তারিত জানার জন্য পড়ুন কুরআন সুন্নাহের আলোকে ইসলামী আকীদা এই বইটি। শাসকের অন্যায় কাজের সমালোচনা জায়েজ। শুধু জায়েজই নয় আবশ্যিক কর্তব্যও বটে। রাষ্ট্র, রাষ্ট্রপ্রধান, সরকার বা শাসক-প্রশাসকের পাপের ক্ষেত্রে মুমিনের দায়িত্ব ঘৃনা ও আপত্তি। শাসক বা প্রশাসকের পাপ বা অন্যায় কাজ দুপ্রকার, তাদের জীবনের ব্যক্তিগত অন্যায় কাজ এবং অন্যায় কাজের নির্দেশনা বা অন্যায় নির্ভর আইন,নীতি বা বিধান প্রণয়ন। সকলক্ষেত্রে মুমিনদের নূনতম দায়িত্ব অন্যায় কাজকে ঘৃনা করা। এরপর মুমিন সাধ্যমত আপত্তি ও প্রতিবাদ করবেন। এরুপ অন্যায় কাজ মেনে নেওয়া, স্বীকৃতি দেওয়া, এবিষয়ে তাদের অনুসরণ করা বা এর পক্ষে অবস্থান নেওয়া মুমিনের জন্য নিষিদ্ধ। তবে অন্যান্য বিষয়ে রাষ্ট্রীয় আনুগত্য বজায় রেখে রাষ্ট্রীয় শৃঙ্খলার মধ্যে থেকে সমালোচনা করতে হবে,আপত্তি ও প্রতিবাত জানাতে হবে। কোন ভাবেই আইন অমান্য, শৃঙ্খলা ভঙ্গ কিংবা আইন নিজের হাতে তুলে নেয়া যাবে না। উম্মে সালামা রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, إِنَّهُ يُسْتَعْمَلُ عَلَيْكُمْ أُمَرَاءُ فَتَعْرِفُونَ وَتُنْكِرُونَ فَمَنْ كَرِهَ فَقَدْ بَرِئَ وَمَنْ أَنْكَرَ فَقَدْ سَلِمَ وَلَكِنْ مَنْ رَضِىَ وَتَابَعَ গ্ধ. قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ أَلاَ نُقَاتِلُهُمْ قَالَ لاَ مَا صَلَّوْا অচিরেই তোমাদের উপর অনে শাসক প্রশাসক আসবে যারা ন্যায় ও অন্যায় উভয় প্রকার কাজ করবে। যে ব্যক্তি তাদের অন্যায়কে ঘৃনা করবে সে অন্যায়ের অপরাধ থেকে মুক্ত হবে। আর যে ব্যক্তি আপত্তি করবে সে (আল্লাহর অসন্তুষ্টি থেকে ) নিরাপত্তা পাবে। কিন্তু যে এসকল অন্যায় কাজ মেনে নেবে বা তাদের অনুসরণ করবে (সে বাচঁতে পারবে না)। সাহাবীগণ বললেন হে আল্লাহর রাসূল আমরা কি তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধকরব না? তিনি বললেন, না, যতক্ষন তারা সালাত আদায় করবে। সহীহ মুসলিম, হাদীস নং১৮৫৪। আউফ ইবনে মালিক রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, أَلاَ مَنْ وَلِىَ عَلَيْهِ وَالٍ فَرَآهُ يَأْتِى شَيْئًا مِنْ مَعْصِيَةِ اللَّهِ فَلْيَكْرَهْ مَا يَأْتِى مِنْ مَعْصِيَةِ اللَّهِ وَلاَ يَنْزِعَنَّ يَدًا مِنْ طَاعَةٍ তোমরা হুশিয়ার! তোমাদের কারো উপর যদি কেন শাসক প্রশাসক নিযুক্ত হন এবং সে দেখতে পায় যে,উক্ত শাসক বা প্রশাসক আল্লাহর অবাধ্যতার কোন কাজে লিপ্ত হচ্ছেন, তবে সে যেন আল্লাহর অবাধ্যতার উক্ত কর্মকে ঘৃনা করে, কিন্তু আনুগত্য থেকে হাত গুটিয়ে নিবে না। সহীহ মুসলিম, হাদীস নং১৮৫৫। উপরের আলোচনা থেকে স্পষ্ট যে, সাধ্যমত শাসকের অন্যায় কাজের সমালোচনা করা, প্রতিবাদ করা প্রতেক মুমিনের দায়িত্ব। তবে অন্যান্য ক্ষেত্রে রাষ্টের প্রতি আনুগত্য বজায় রাখতে হবে। রাষ্ট্রীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ হয় এমন কাজ করা যাবে না । আল্লাহ সবাইকে তাওফীক দিন। কাউকে মুশরকি বলার র্অথ কি ত্যাকে কাফরিও বলা? মুশরকি মাত্রই কি কাফরি? শাসকরে অন্যায় কাজরে সমালোচনা করা কি জায়জে?
হ্যাঁ। কাউকে মুশরিক বলার অর্থ তাকে কাফেরও বলা। মুশরিক মাত্রই কাফের। বিষযটি নিচে বিস্তারিত আলোচনা হল। কুফ্র আরবী শব্দ। কুফ্র এর আভিধানিক অর্থ হলো অবিশ্বাস, অস্বীকার, অকৃতজ্ঞতা ইত্যাদি। ইসলামী পরিভাষায় আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের (স.) উপর এবং ঈমানের রুকনগুলোতে বিশ্বাস না থাকাকেই কুফর বলে। শিরক শব্দটিও আরবী। শিরক এর আভিধানিক অর্থ হলো অংশীদার করা বা বানানো, সহযোগী বানানো ইত্যদী। আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে আল্লাহর কোনো বিষয়ে আল্লাহর সমকক্ষ মনে করা বা আল্লাহর প্রাপ্য কোনো ইবাদত আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো জন্য পালন করা বা আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে ডাকাকে ইসলামী পরিভাষায় শিরক বলে। ইসলামী পবিভাষায় বিশ্বাসের অবিদ্যমানতাই কুফর বা অবিশ্বাস। আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের উপর এবং ঈমানের রুকনগুলিতে বিশ্বাস না থাকাকেই ইসলামের পরিভাষায় কুফর বলে গণ্য। অস্বীকার, সন্দেহ, দ্বিধা, হিংসা, অহংকার, ইত্যাদি যে কোন কারনে যদি কারো মধ্যে ঈমান বা দৃঢ় প্রত্যয়ের বিশ্বাস অনুপস্থিত থাকে তবে তাকে ইসলামী পরিভাষায় কুফর বলে গণ্য করা হয়। অনুরুপভাবে মহান আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে কোনো বিষয়ে তাঁর সমতুল বা সমকক্ষ বা তাঁর সাথে তুলনীয় বলে বলে বিশ্বাস করার মাধ্যমে আল্লাহর একত্ব ও অতুলনীয়ত্ব অস্বীকার করাও কুফর। তবে এ পর্যায়ের কুফরকে ইসলামের পরিভাষায় শিরক বলা হয়। কুফর ও শিরক পরস্পর অবিচ্ছ্যেভাবে জড়িত। কাউকে কোনোভাবে কোনো বিষয়ে মহান আল্লাহর সমকক্ষ বা তুলনীয় মনে করার অর্থই তাঁর একত্বে অবিশ্বাস বা কুফরী করা। আল্লাহর তাওহীদ ও রাসূলগণের দাওয়াতে অবিস্বাস না করে কেউ শিরক করতে পারে না। কাজেই মুশরিক মাত্রই কাফের বলে গণ্য হবে। অপরদিকে কাউকে আল্লাহর সমকক্ষ না মেনে ঈমানের কোনো রুকন অবিশ্বাস করলে তা শুধু কুফর বলে গণ্য। সুতরাং কাফের মাত্রই মুশরিক নয়। যেমন যদি কেউ আল্লাহর অস্তিত্বে বা তাঁর প্রতিপালনের একত্বে অবিশ্বাস করে বা মুহাম্মাদ (স.) এর রিসালাত, খাতমুন নবুওয়াত ইত্যাদি অস্বীকার করে তবে তা কুফ্র হলেও বাহ্যত তা শিরক নয়। কারণ এরুপ ব্যক্তি সুস্পষ্ট ভাবে কাউকে আল্লাহর সাথে তুলনীয় দাবি করছে না। তবে প্রকৃতপক্ষে এরুপ কুফরের সাথেও শিরক জড়িত। কারন এরুপ ব্যক্তি কোন না কোন ভাবে এ জড় বিশ্বকে মহান আল্লাহর মত অনাদি-অনন্ত বলে বিশ্বাস করছে, বিশ্ব পরিচালনায় প্রকৃতি বা অন্য কোন শক্তিকে বিশ্বাস করছে। উপরের আলোচনা থেকে স্পষ্ট যে, কাউকে মুশরিক বলার অর্থই হলো তাকে কাফেরও বলা। মুশরিক মাত্রই কাফের। তবে সকল কাফের সাধারণ ভাবে মুশরিক নয়। একটি কথা মনে রাখা জরুরী যে, কেউ কুফুরী কোন কাজ করলেই তাকে কাফের বলা যায় না। সমাজের অনেক মানুষই নিজেকে মুমিন ও তাওহীদে বিশ্বাসী বলে দাবি করার পরেও বিভিন্ন প্রকার শিরক ও কুফরের মধ্যে লিপ্ত থাকেন। এদের এ সকল কর্ম শিরক বা কুফর বলে আমরা নিশ্চিত জানার পরেও এদেরকে কাফির বা মুশরিক বলার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করা ইসলামের নির্দেশ। কোনো কর্মকে শিরক বা কুফর বলা এবং কোনো ব্যক্তিকে কাফের বা মুশরিক বলার মাঝে অনেক পার্থক্য রয়েছে। আব্দুল্লাহ ইবনে উমার রা. বলেন, রাসূল সা. বলেছেন,
إِذَا كَفَّرَ الرَّجُلُ أَخَاهُ فَقَدْ بَاءَ بِهَا أَحَدُهُمَا যদি কোনো ব্যক্তি তার ভাইকে কাফের বলে,তবে এ কথা দুজনের একজনের উপর প্রযোয্য হবে। সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৬০। আবু জার রা. বলেন, রাসূল সা. বরেছেন,
مَنْ دَعَا رَجُلاً بِالْكُفْرِ أَوْ قَالَ عَدُوَّ اللَّهِ. وَلَيْسَ كَذَلِكَ إِلاَّ حَارَ عَلَيْهِ যদি কেউ কোন মানুষকে কুফুরির সাথে জড়িত করে আহহ্বান করে অথবা তাকে বলে হে আল্লাহর শত্রু আর সে তা না হয়, তবে তা বক্তার উপর বর্তবে। সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৬১
আরো বিস্তারিত জানার জন্য পড়ুন কুরআন সুন্নাহের আলোকে ইসলামী আকীদা এই বইটি। শাসকের অন্যায় কাজের সমালোচনা জায়েজ। শুধু জায়েজই নয় আবশ্যিক কর্তব্যও বটে। রাষ্ট্র, রাষ্ট্রপ্রধান, সরকার বা শাসক-প্রশাসকের পাপের ক্ষেত্রে মুমিনের দায়িত্ব ঘৃনা ও আপত্তি। শাসক বা প্রশাসকের পাপ বা অন্যায় কাজ দুপ্রকার, তাদের জীবনের ব্যক্তিগত অন্যায় কাজ এবং অন্যায় কাজের নির্দেশনা বা অন্যায় নির্ভর আইন,নীতি বা বিধান প্রণয়ন। সকলক্ষেত্রে মুমিনদের নূনতম দায়িত্ব অন্যায় কাজকে ঘৃনা করা। এরপর মুমিন সাধ্যমত আপত্তি ও প্রতিবাদ করবেন। এরুপ অন্যায় কাজ মেনে নেওয়া, স্বীকৃতি দেওয়া, এবিষয়ে তাদের অনুসরণ করা বা এর পক্ষে অবস্থান নেওয়া মুমিনের জন্য নিষিদ্ধ। তবে অন্যান্য বিষয়ে রাষ্ট্রীয় আনুগত্য বজায় রেখে রাষ্ট্রীয় শৃঙ্খলার মধ্যে থেকে সমালোচনা করতে হবে,আপত্তি ও প্রতিবাত জানাতে হবে। কোন ভাবেই আইন অমান্য, শৃঙ্খলা ভঙ্গ কিংবা আইন নিজের হাতে তুলে নেয়া যাবে না। উম্মে সালামা রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, إِنَّهُ يُسْتَعْمَلُ عَلَيْكُمْ أُمَرَاءُ فَتَعْرِفُونَ وَتُنْكِرُونَ فَمَنْ كَرِهَ فَقَدْ بَرِئَ وَمَنْ أَنْكَرَ فَقَدْ سَلِمَ وَلَكِنْ مَنْ رَضِىَ وَتَابَعَ قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ أَلاَ نُقَاتِلُهُمْ قَالَ لاَ مَا صَلَّوْا অচিরেই তোমাদের উপর অনে শাসক প্রশাসক আসবে যারা ন্যায় ও অন্যায় উভয় প্রকার কাজ করবে। যে ব্যক্তি তাদের অন্যায়কে ঘৃনা করবে সে অন্যায়ের অপরাধ থেকে মুক্ত হবে। আর যে ব্যক্তি আপত্তি করবে সে (আল্লাহর অসন্তুষ্টি থেকে) নিরাপত্তা পাবে। কিন্তু যে এসকল অন্যায় কাজ মেনে নেবে বা তাদের অনুসরণ করবে (সে বাচঁতে পারবে না)। সাহাবীগণ বললেন হে আল্লাহর রাসূল আমরা কি তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধকরব না? তিনি বললেন, না, যতক্ষন তারা সালাত আদায় করবে। সহীহ মুসলিম, হাদীস নং১৮৫৪। আউফ ইবনে মালিক রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন,
أَلاَ مَنْ وَلِىَ عَلَيْهِ وَالٍ فَرَآهُ يَأْتِى شَيْئًا مِنْ مَعْصِيَةِ اللَّهِ فَلْيَكْرَهْ مَا يَأْتِى مِنْ مَعْصِيَةِ اللَّهِ وَلاَ يَنْزِعَنَّ يَدًا مِنْ طَاعَةٍ তোমরা হুশিয়ার! তোমাদের কারো উপর যদি কেন শাসক প্রশাসক নিযুক্ত হন এবং সে দেখতে পায় যে,উক্ত শাসক বা প্রশাসক আল্লাহর অবাধ্যতার কোন কাজে লিপ্ত হচ্ছেন, তবে সে যেন আল্লাহর অবাধ্যতার উক্ত কর্মকে ঘৃনা করে, কিন্তু আনুগত্য থেকে হাত গুটিয়ে নিবে না। সহীহ মুসলিম, হাদীস নং১৮৫৫। উপরের আলোচনা থেকে স্পষ্ট যে, সাধ্যমত শাসকের অন্যায় কাজের সমালোচনা করা, প্রতিবাদ করা প্রতেক মুমিনের দায়িত্ব। তবে অন্যান্য ক্ষেত্রে রাষ্টের প্রতি আনুগত্য বজায় রাখতে হবে। রাষ্ট্রীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ হয় এমন কাজ করা যাবে না । আল্লাহ সবাইকে তাওফীক দিন।
প্রশ্নঃ 15
আস-সালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ। মুহতারাম, আপনার কাছে আমার কাছে আমার জানার বিষয় হল, আউস ও খাজরাজের লোকেরা কোন ধর্মের মানুষ ছিলেন?
20 Dec 2025
ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ। প্রশ্নটি করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। নিম্নে আপনার প্রশ্নের উত্তর প্রদত্ত হল । আউস ও খাজরাজ গেত্রের লোকেরা আরবের অন্যান্য মানুষদের মতই ইব্রাহীম আঃ এর ধর্মের অনুসারী ছিলেন। এধর্মের ভিতরে তারা বিভিন্ন ধরনের বিকৃতি সাধন করেন এবং তারা শিরকে লিপ্ত হন। তারা আল্লাহর একত্বে বিশ্বাসী ছিলেন। তবে আল্লাহর রহমত লাভের জন্য ফিরিশতা, জিন, নবী, ওলীগণ, তাদের প্রতিমা বা স্মৃতিবিজড়িত স্থান ও দ্রব্যের পুজা করতেন। এছাড়া নানাবিধ কুসংস্কার তাদের মধ্যে প্রসার লাভ করে।
প্রশ্নঃ 16
Is Sheikh Albani the best muhaddis in thise century
20 Dec 2025
শায়খ নাসির উদ্দিন আলবানী রহ. তাঁর সময়ের শ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিসদের অন্যতম ছিলেন। হাদীস শাস্ত্রে তাঁর খেদমত ব্যাপক।তবে তিনি বর্তমান সময়ের বেস্ট মুহাদ্দিস ছিলেন এটা এক কথায় বলা কঠিন। বিষয়টি আপেক্ষিক। কারো নিকট তিনি বেস্ট মুহাদ্দিস আবার কারো নিকট নন। আর এরূপ কথা বলা উচিতও নয়। এগুলো অতিভক্তিমূলক কথা মাত্র। শাইখ মুহাম্মাদ নাসিরুদ্দীন আলবানী একজন বড় মুহাদ্দিস ছিলেন এক কথাটুকুই তাঁর মূল্যায়নের জন্য এতটুকুই যথেষ্ট। আল্লাহ সবচেয়ে ভাল জানেন। আল্লাহ শাইখ আলবানীকে তাঁর কর্মের যোগ্য পুরস্কার দান করুন ও তাকে রহমত করুন। আমাদের আবেগকে সুন্নাতের অনুগত করার তাওফীক দান করুন।
প্রশ্নঃ 17
বাংলা উচ্চারণ দেখে পড়লে কোরআন পড়া হবে কি না?
20 Dec 2025
প্রশ্নটি করার জন্য আপনাকে জাযাকাল্লাহ। নিম্নে এ বিষয়ে কিঞ্চিত আলোচনা করা হল, আশা করি আপনি তাতে আপনার প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাবেন ইনশাল্লাহ। বাংলা উচ্চারন দেখে পড়লে কোরআন পড়া তো হবেই না, বরং কোরআন পড়তে গিয়ে ঈমানবিরেধি কথা বলার কারনে ঈমান চলে যেতে পারে। কারন কোরআন একটি ভাষা, একটি কথা যার উচ্চারণের ভুলত্রুটির কারনে অর্থ পরিবর্তন হয়ে যায়। যেমন, ه এবং ح উভয়েরই বাংলা উচ্চারনে হা বলি বা লিখি। অথচ আরবীতে উভয়ের উচ্চারণস্থল ভিন্ন ভিন্ন(ه উচ্চরণ করতে হয় হলক বা কন্ঠনালির শুরু হতে আর ح উচ্চারণ করতে হয় কন্ঠনালির মাঝখান হতে) এবং উচ্চারণের এ ভিন্নতার কারণে অর্থের মাঝেও ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে। উদাহরণস্বরুপ, আলহামদু লিল্লাহ বলার সময় যদি হা এর উচ্চরন কন্ঠনালির শুরু থেকে হয় তাহলে আল্লাহকে গালি দেয়া হল আর যদি উচ্চারনটি কন্ঠনালির মাঝখান থেকে হয় তাহলে আল্লাহর প্রশংসা করা হল। বিষয়টি শুধু এস্থানের সাথেই সীমাবদ্ধ নয় বরং কোরআনের প্রত্যেকটি স্থানের সাথেই গভীরভাবে জড়িত। সুতরাং এব্যাপারে আমাদের সাবধান থাকতে হবে। কোরআন আরবীতেই শুদ্ধভাবে পড়ার চেষ্টা করবেন । যদি কোথাও ভুল হয়ে যায় তাহলে বান্দা আন্তরিক হলে আশা করা যায় আল্লাহ মাফ করবেন। আল্লাহ আমাদের সকলকে সহী শুদ্ধভাবে কোরআন তেলাওয়াত তাওফীক দান করুন। আমীন।
প্রশ্নঃ 18
আওস ও খাজরাজ গোত্রের লোকেরা কোন ধর্মের মানুষ ছিল?
20 Dec 2025
আউস ও খাজরাজ গেত্রের লোকেরা আরবের অন্যান্য মানুষদের মতই ইব্রাহীম আঃ এর ধর্মের অনুসারী ছিলেন। এধর্মের ভিতরে তারা বিভিন্ন ধরনের বিকৃতি সাধন করেন এবং তারা শিরকে লিপ্ত হন। তারা আল্লাহর একত্বে বিশ্বাসী ছিলেন। তবে আল্লাহর রহমত লাভের জন্য ফিরিশতা, জিন, নবী, ওলীগণ, তাদের প্রতিমা বা স্মৃতিবিজড়িত স্থান ও দ্রব্যের পুজা করতেন। এছাড়া নানাবিধ কুসংস্কার তাদের মধ্যে প্রসার লাভ করে।
প্রশ্নঃ 19
জিনা প্রমাণিত হওয়ার জন্য ৪ জন স্বাক্ষী কেন প্রয়োজন?
20 Dec 2025
প্রশ্নটি করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। নিম্নে আপনার প্রশ্নে উল্লেখিত বিষয়ে আলোচনা করা হল। আশা করি আপনি তাতে আপনার প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাবেন। ইনশাল্লাহ। মহান আল্লাহ সমস্ত মাখলুকাতের মধ্য হতে মানুষকে সবচেয়ে সুন্দর করে সৃষ্টি করেছেন। মানুষ লাভ করেছে সর্বশ্রেষ্ঠ মাখলুকাতের সুমহান মর্যাদা। উদ্দেশ্য একটাই, মানুষ তাঁর সৃষ্টিকর্তা মহান আল্লাহর ইবাদত করবে। সবসময় সবক্ষেত্রে তাঁর এবং তাঁর রাসূল সাঃ এর দিকনির্দেশনা মেনে চলবে। সর্বাত্নক চেষ্টা করবে নিজেকে জান্নাতিদের সফলকাম কাঁতারে শামিল করার জন্য। শতচেষ্টার পরেও প্রকাশ্য দুশমন শয়তানের প্ররোচনায়, প্রবৃত্তির তাড়নায় কখন কখন মানুষ তার প্রতিপালককে ভুলে যায়। বিচ্যুত হয় সঠিক পথ থেকে, আর লিপ্ত হয় নানা রকম অপকর্মে। হাতছাড়া করে ফেলে শ্রেষ্ঠত্যের মহান গুন। তারপরেও ইসলাম চাই মানুষ তার পাপ কর্মের ব্যাপারে লজ্জিত আর অনুতপ্ত হয়ে ফিরে আসুক আল্লাহর দিকে। তাঁর কাছে ক্ষমা চেয়ে ফিরে পাক তার হারানো সম্মান। আর তার পাপকর্মটি গোপন থাকুক অন্যান্য মানুষের নিকট। কেউ যদি তার দোষত্রুটি জেনে ফেলে তাকে উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে উক্ত দোষ গোপন রাখতে। উপরোন্ত তা গোপন রাখার ব্যাপারে হাদীস শরীফে ফযীলত বর্ণনা করা হয়েছে। এক হাদীসে তিনি বলেন:
مَنْ سَتَرَ مُسْلِمًا سَتَرَهُ اللَّهُ يَوْمَ الْقِيَامَة
যে ব্যাক্তি কোন মুসলমানের দোষ গোপন করবে আল্লাহ তায়ালা কিয়ামতের দিন তার দোষ গোপন করবেন। বুখারী, আস-সহীহ, হাদীস নং ২৪৪২। মুসলিম, আস-সহীহ, হাদীস নং ৬৭৪৩। পাশাপাশি কঠোরভাবে নিষেধ করা হয়েছে দোষচর্চা করতে। বিদায় হজ্জের ভাষণে রাসূলে কারীম সাঃ বলেন:
فَإِنَّ دِمَاءَكُمْ وَأَمْوَالَكُمْ وَأَعْرَاضَكُمْ بَيْنَكُمْ حَرَامٌ
অর্থঃ তোমাদের রক্ত, তোমাদের সম্পদ, তোমাদের সম্মান পরষ্পরের জন্য হারাম (সম্মানিত)। বুখারী, আস-সহীহ, হাদীস নং ৬৭। মুসলিম, আস-সহীহ, হাদীস নং ৪৪৭৮। কোরআনুল কারীমে মহান আল্লাহ কারো দোষচর্চা বা গীবত করাকে মৃতভাইয়ের গোশত খাওয়ার সাথে তুলনা করেছে।এরশাদ হয়েছে:
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اجْتَنِبُوا كَثِيرًا مِنَ الظَّنِّ إِنَّ بَعْضَ الظَّنِّ إِثْمٌ وَلَا تَجَسَّسُوا وَلَا يَغْتَبْ بَعْضُكُمْ بَعْضًا أَيُحِبُّ أَحَدُكُمْ أَنْ يَأْكُلَ لَحْمَ أَخِيهِ مَيْتًا فَكَرِهْتُمُوهُ وَاتَّقُوا اللَّهَ إِنَّ اللَّهَ تَوَّابٌ رَحِيمٌ
অর্থঃ হে মুমিনগণ ! তোমরা অধিকাংশ ধারনা থেকে বিরত থাক ; কারণ কিছু কিছু ধারণা পাপ। আর তোমরা একে অপরের দোষ তালাশ করনা। আর কেউ যেন কারো পশ্চাতে দোষচর্চা না করে। তোমাদের মধ্যে কেউ কি তার মৃত ভাইয়ের গোশত খেতে পছন্দ করে? বস্তুত তোমরা তো এটাকে অপছন্দই করো। তোমরা আল্লাহকে ভয় কর ; আল্লাহ তাওবা কবুল কারী, পরম দয়ালু। সূরা-হুজরাত, আয়াত-১২। অনুরুপভাবে অযৌক্তিক বা বিনা কারনে কাউকে হত্যা করার ব্যাপারে ইসলাম ঘোর বিরোধী। কোরআনে কারীমে বিনা কারনে একজনের হত্যাকে সমস্ত মানুষকে হত্যা করার সাথে তুলনা করেছে। মহান আল্লাহ বলেন:
مَنْ قَتَلَ نَفْسًا بِغَيْرِ نَفْسٍ أَوْ فَسَادٍ فِي الْأَرْضِ فَكَأَنَّمَا قَتَلَ النَّاسَ جَمِيعًا
অর্থঃ যে ব্যাক্তি কোন হত্যাকান্ড ছাড়া বা দুনিয়ায় কোন ধবংসাত্ম ক কাজ করা ছাড়া কাউকে হত্যা করল সে যেন সকল মানুষকেই হত্যা করল। সূরা মায়িদা, আয়াত নং ৩২। কোন অপরাধ অথবা গুরুত্বপূর্ণ কোন বিচারকাজ সম্পাদন করার জন্য ইসলাম উক্ত বিষয়ে নিশ্চিত হতে বা শক্তিশালী করতে সাক্ষীর ব্যাবস্থা করেছে। সকল ক্ষেত্রে এক, দুই বা তিনজন সাক্ষী নির্ধারণ করলেও যিনার ক্ষেত্রে চারজন সাক্ষীর শর্তরোপ করা হয়েছে। কোরআনে কারীমে এরশাদ হয়েছে :
وَاللَّاتِي يَأْتِينَ الْفَاحِشَةَ مِنْ نِسَائِكُمْ فَاسْتَشْهِدُوا عَلَيْهِنَّ أَرْبَعَةً مِنْكُمْ
অর্থঃ তোমাদের নারীদের মধ্যে যারা ব্যভিচার করে তাদের বিরুদ্ধে তোমাদের মধ্য হতে চারজন সাক্ষী তলব কর। সূরা নিসা, আয়াত-১৫। চারজনের কম হলে উক্ত সাক্ষ্য গ্রহনযগ্য তো হবেই না, উল্টা তাদের উপরই অপবাদের শাস্তি হিসাবে আশিবার বেত্রাঘাতের বিধান দিয়েছে ইসলাম । এপ্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক এরশাদ করেন:
لَوْلَا جَاءُوا عَلَيْهِ بِأَرْبَعَةِ شُهَدَاءَ فَإِذْ لَمْ يَأْتُوا بِالشُّهَدَاءِ فَأُولَئِكَ عِنْدَ اللَّهِ هُمُ الْكَاذِبُونَ
অর্থঃ তারা কেন এব্যাপারে চারজন সাক্ষী উপস্থিত করেনি? যেহেতু তারা সাক্ষী উপস্থিত করেনি সে কারনে তারা আল্লাহর নিকট মিথ্যাবাদী। সূরা নূর,আয়াত-১৩। অপর একটি আয়াতে আল্লাহ বলেন:
وَالَّذِينَ يَرْمُونَ الْمُحْصَنَاتِ ثُمَّ لَمْ يَأْتُوا بِأَرْبَعَةِ شُهَدَاءَ فَاجْلِدُوهُمْ ثَمَانِينَ جَلْدَةً وَلَا تَقْبَلُوا لَهُمْ شَهَادَةً أَبَدًا وَأُولَئِكَ هُمُ الْفَاسِقُونَ
অর্থঃ যাহার সাধ্ববী নারীদের ব্যাপারে অপবাদ আরোপ করে এবং চারজন সাক্ষী উপস্থিত করেনা, তাদেরবে আশিটি বেত্রঘাত করবে এবং কখন তাদের সাক্ষ্য গ্রহন করবে না । মুমিনের জন্য এটা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সূরা নূর, আয়াত-৪। হযরত আবু হুরাইরা রাঃ থেকে বর্ণীত একটি হাদীসে আছে
سعد بن عبادة قال لرسول الله صلى الله عليه وسلم: يا رسول الله، أرأيت إن وجدت مع امرأتي رجلا، أمهل حتى آتي بأربعة شهداء؟ قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: نعم হযরত সাদ ইবনে উবাদাহ রাঃ রাসূল সাঃ কে জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসূল সাঃ আমি যদি আমার স্ত্রীর সাথে কাউকে দেখি তাহলে আমি কি চারজন সাক্ষী উপস্থিত করা পর্যন্ত ছেড়ে দিব? উত্তরে রাসূল সাঃ বললেন : হা।শায়েখ শুয়াইব আরনাউত বলেন; হাদীসের সনদটি সহীহ। সহী ইবনে হিব্বান, তাহকীক, শুয়াইব আরনাউত, হাদীস নং ৪৪০৯। মুসলিম, আস-সহীহ, হাদীস নং ১৪৯৮। কাউকে কোন অপরাধে লিপ্ত দেখে তাকে বিচারকের নিকট সোপর্দ করে যথাযথ প্রক্রিয়ায় আতপক্ষ সমর্থনের মাধ্যমে বিচার ছাড়া কেউ শাস্তি দিতে পারবে না। এ প্রক্রিয়ার বাইরে স্বয়ং রাষ্ট্রপ্রধান বা প্রধান বিচারপতিও কাউকে শাস্তি দিতে পারবে না । খলীফা উমার রাঃ আব্দুর রহমান ইবনে আউফ রাঃ কে বলেন:
لَوْ رَأَيْتَ رَجُلاً عَلَى حَدٍّ زِنًا ، أَوْ سَرِقَةٍ وَأَنْتَ أَمِيرٌ فَقَالَ شَهَادَتُكَ شَهَادَةُ رَجُلٍ مِنَ الْمُسْلِمِينَ قَالَ صَدَقْتَ
অর্থঃ আপনি শাসক থাকা অবস্থায় যদি কাউক ব্যভিচারের অপরাধে বা চুরির অপরাধে রত দেখতে পান তাহলে তার বিচারের বিধান কী? ( নিজের দেখাতেই কি বিচার করতে পারবেন?) আব্দুর রহমান রাঃ বললেন, আপনার সাক্ষ্যও একজন সাধারন মুসলিমের সাক্ষ্যের সমান। উমার রাঃ বলেন,আপনি ঠিকই বলেছেন। বুখারী আস-সহীহ, কিতাবুল ফিতান, বাব, আশ্ শাহাাদাত তাকুনু ইনদাল হাকীম। অর্থৎ রাষ্ট্রপ্রধান নিজের হাতে বিচার তুলে নিতে পারবেন না । এমনকি তার সাক্ষ্যের অতিরিক্ত কোন মূল্যও নেই। রাষ্ট্রপ্রধানের একার সাক্ষ্যে কোন বিচার হবে না । বিধিমোতাবেক দুই জন বা চারজন সাক্ষীর কমে বিচারক কারো বিচার করতে পারবেন না। অন্য ঘটনায় উমার রাঃ রাত্রে মদীনায় ঘোরাফেরা করার সময় একব্যাক্তিকে ব্যভিচারে লিপ্ত দেখতে পান। তিনি পরদিন সাহাবীগণকে জিজ্ঞাসা করেন, যদি রাষ্ট্রপ্রধান কাউকে ব্যভিচারে লিপ্ত দেখতে পান তাহলে তিনি কি শাস্তি প্রদান করতে পারবেন? তখন আলী রাঃ বলেন, কখনই না। আপনি ছাড়া আরো তিনজন প্রত্যক্ষ্য সাক্ষী যদি অপরাধের সাক্ষ্য না দেয় তাহলে আপনার উপরের মিথ্যা অপবাদের শাস্তি প্রয়োগ করা হবে। আল কানযুল আকবার ১/২২৭ । এটা স্পষ্ট বিষয় যে, চারজন সাক্ষীর সাক্ষ্যর ভিত্তিতে জিনা প্রমাণীত হওয়া এক বিরাট কঠিন বিষয়। একারনেই শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহঃ বলেন:ইসলামের শুরু থেকে এপর্যন্ত সাক্ষ্যর ভিত্তিতে জিনা প্রমাণীত হয়নি। যা হয়েছে তা স্বীকরোক্তির ভিত্তিতে হয়েছে। এব্যাপারে ইসলামের সর্বোচ্চ এ সতর্কতা গ্রহন বা কঠিন শর্তারোপের কারন হল, মানুষের জীবন অতি মূল্যাবান। আর ইসলামের উদ্দে্শ্য হল, অপরাধকে নিয়ন্ত্রণ করা, অপরাধীকে নির্মুল করা নয়। বিচারকের ভুলে অপরাধী বেচে যাক কিন্তু তার ভুলে যেন নিরাপরাধ শাস্তি না পাই এবং কম অপরাধী বেশি শাস্তি না পাই। এজন্য ইসলামে হুদুদকে কঠিন করা হয়েছে এবং হুদুদের ব্যাবস্থাপনা আরো বেশি কঠিন করা হেয়েছে। বিচারক সর্বাত্নক চেষ্টা করবে মৃত্যুদন্ড না দেয়ার জন্য। ফুক্বাহায়ে কেরাম এব্যাপারে একমত পোষণ করেছেন যে, অপরাধের পূর্ণতার ব্যাপারে সামান্যতম সন্দেহ থাকলেও আর মৃত্যুদন্ড দেয়া যাবে না। কারন, বিচারকের ভুলে নিরাপরাধের বা কম অপরাধীর বেশি শাস্তি হওয়ার চেয়ে অপরাধীর মুক্তি বা বেশি অপরাধের জন্য কম শাস্তি বাঞ্চনীয়। তারপরেও যখন এই জঘণ্য কর্মটি চারজন ব্যাক্তি প্রত্যক্ষ্য করতে সক্ষম হয় তাহলে বুঝতে হবে সে ব্যাক্তি অধঃপতনের সর্বনিম্ম পর্যয়ে পৌছে গেছে এবং এই কর্মটি প্রকাশ্যে করেছে। এই অবস্থায় ব্যাপক স্বার্থে ইসলাম তাকে দুনিয়া থেকে বিদায় দেয়ার অনুমতি প্রদান করে। আল্লাহ আমাদেরকে পরিপূর্ণ তাকওয়া অর্জন করার তাওফীক দান করুন।