আস-সুন্নাহ ট্রাস্ট এ আপনাকে স্বাগতম

প্রশ্নোত্তর

প্রশ্নঃ 1
stock business, election, jakat
23 Dec 2025
১। স্টক বিজনেস মূলত হারাম নয়। তবে যদি কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে পণ্যের দাম বাড়ানো উদ্দেশ্য হয় তাহেল হারাম হবে। ২। ভোট পদ্ধতি হারাম এটা বলা উচিৎ নয়। কোনো কিছুকে হারাম বলতে সুস্পষ্ট দলিল প্রয়োজন। ভোট দেওয়াই হারাম এটি বলা সঠিক নয়। ভোট অর্থ মতামত প্রকাশ বা সমর্থন। ইসলাম শূরা বা পরামর্শ ভিত্তিক ব্যবস্থার নির্দেশনা দেয়। এজন্য ইসলামে মতপ্রকাশ, পরামর্শ বা সমর্থনের হাজারো নমুনা রয়েছে। শাসক নির্বাচনেও তারা জনগনের মতামত গ্রহণ করেছেন। উমার (রা) ওফাতের পূর্বে আশারায়ে মুবাশ্শারার ৬ জন সাহাবীকে কমিটি করে দেন। তাদের মধ্য থেকে আব্দুর রাহমান ইবন আওফ (রা) বলেন, আমি শাসক হব না। আপনারা চাইলে আমাকে দায়িত্ব দেন, আমি জনগণের সাথে পরামর্শ করে আপনাদের মধ্য থেকে কাউকে খলিফা ঘোষণা করব। তিন দিন যাবৎ জনগণের সাথে পরামর্শের পরে তিনি উসমান (রা)- কে খলিফা ঘোষণা করেন। (সহীহ বুখারী, কিতাবুল আহকাম, বাব কাইফা উবাইউন নাসুল ইমাম)। ব্যক্তিগতভাবে মত বা সমর্থন প্রকাশের ক্ষেত্রে অনেক সময় অসুবিধা থাকে। এজন্য পরবর্তী সময়ে গোপন ব্যালটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কাজেই গোপন ব্যালটে বা প্রকাশ্যে শাসক বা প্রতিনিধি নির্বাচনে ভোট প্রদানকে সরাসরি হারাম বলা সঠিক নয়। ভোট ব্যবস্থার শরীআহ বিরোর্ধী বিষয়গুলোকে নির্ধারিত দলিলের মাধ্যমে হারাম বলা যেতে পারে। এমনকি কোনো বৈধ ব্যবস্থাকে শুধু অপকারিতা বা ক্ষতিকর দিকগুলোর অজুহাতে সুস্পষ্ট দলিল ছাড়া হারাম বলা সঠিক নয়। ৩। আপনি যদি নিশ্চিত হন যে, গ্রহীতা যাকাত গ্রহণের মত অসচ্ছল তবে তাকে যাকাত দেওয়ার সময় জানানো জরুরী নয় যে এটা যাকাতের সম্পদ বা টাকা। যাকাত দেয়ার সময় নিয়্যাত করবেন যে আমি এটা যাকাত হিসাবে দিচ্ছি।
প্রশ্নঃ 2
আস-সালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ। ব্যবসায় মহিলা ক্রেতা
22 Dec 2025
ওয়া আলাইকুমুস সালাম। যেহেতু দোকানের সামনে খোলা থাকে, লোকজন যাওয়া-আসা করে এবং অনেক সময় দোকানে কর্মচারী থাকে তাই এটা নির্জন অবস্থার মধ্যে পড়বে না। আপনি তাদের দিকে তাকােেবন না, প্রয়োজনের অতিরিক্ত কথাও তাদের সাথে বলবেন না।
প্রশ্নঃ 3
স্যার আমি একটা নিয়োগের ৩টা পরীক্ষার মধ্যে ২টি পরীক্ষায় আল্লাহর রহমতে পাস করেছি। শুধু ভাইভা পরীক্ষা বাকী। এখন গত কয়েক বার নিয়োগে রিপোর্ট যোগাযোগ ছাড়া চাকরী হয়না। যোগাযোগ করে চাকরী হলে যে টাকা আয় হয় তা হালাল হবে কী? এই ভাবে চাকরী হলে তা জান্নাতে যেতে প্রতিবন্ধক হবে কী?
22 Dec 2025
ঘুষ সর্বাবস্থায় হারাম। আপনি যদি কোন কারনে বাধ্য হন তাহলে এর জন্য আল্লাহ কাছে তওবা করবেন। যোগ্যতা থাকা সত্তে¡ও যোগাযোগ ছাড়া চাকরী যদি না হয় তাহলে যোগাযোগের (ঘুষের) মাধ্যমে চাকরী নিলে আশা করা যায় বেতনের টাকা হারাম হবে না তবে ঘুষের গোনাহর জন্য আপনাকে আল্লাহর কাছে তওবা করতে হবে, মাফ চাইতে হবে।
প্রশ্নঃ 4
আমার একটি থ্রি পিচের দোকান আছে। এই দোকানে থ্রি পিচের শো র জন্য ডল ব্যবহার করি। এই গুলো কোন ভাল মন্দ বিশ্বাস থেকে নয় । এই টা জায়েয আছে কি না? বা এইভাবে ব্যবসা করলে হালাল হবে কি না? সহীহ ভাবে জানতে চাই। বিষয় টি জানা খুব জরুরী। আশা করি উত্তর দিবেন
20 Dec 2025
এই ধরনের ডল বা পুতুল বা মূর্তি যাই বলি না কেন ইসলামী শরীয়তে তা হারাম, যদিও ভাল বা মন্দ কোন বিশ্বাস না থাক কিংবা ইবাদত বা পূজার উদ্দেশ্যে না হয়। দলীল নিম্নরুপ:
১.عَنْ أَبِى الْهَيَّاجِ الأَسَدِىِّ قَالَ قَالَ لِى عَلِىُّ بْنُ أَبِى طَالِبٍ أَلاَّ أَبْعَثُكَ عَلَى مَا بَعَثَنِى عَلَيْهِ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- أَنْ لاَ تَدَعَ تِمْثَالاً إِلاَّ طَمَسْتَهُ وَلاَ قَبْرًا مُشْرِفًا إِلاَّ سَوَّيْتَهُ
হযরত আবী হায়্যায র. বলেন, আমাকে আলী রা. বললেন, আমি কি তোমাকে এমন একটি বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করব না যে বিষয়ে রাসূল সা. আমাকে উৎসাহিত করেছেন যে, তুর্মি দেখা মাত্র মূর্তিভেঙ্গে ফেলবে আর উঁচু কবর সমান করে দিবে। সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৯৬৯। ২.قَالَ عَمْرُو بْنُ عَبَسَةَ السُّلَمِىُّ فَقُلْتُ وَبِأَىِّ شَىْءٍ أَرْسَلَكَ قَالَ أَرْسَلَنِى بِصِلَةِ الأَرْحَامِ وَكَسْرِ الأَوْثَانِ وَأَنْ يُوَحَّدَ اللَّهُ لاَ يُشْرَكُ بِهِ شَىْءٌ
হযরত আমর ইবনে আবাসাহ আস-সুলামী রা. বলেন আমি রাসূল সা. কে বললাম, আল্লাহ তায়ালা কি দায়িত্ব দিয়ে আপনাকে পাঠিয়েছেন? তিনি বললেন, তিনি আমাকে পাঠিয়েছেন, আত্নীয়তার বন্ধন অটুট রাখার জন্য, মূর্তিভাঙ্গার জন্য আর আল্লাহর একত্ববাদ প্রতিষ্ঠার জন্য যে, তার সাথে কাউকে শরীক করা হবে না। ৩.أَبُو هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم-أَتَانِى جِبْرِيلُ فَقَالَ إِنِّى كُنْتُ أَتَيْتُكَ الْبَارِحَةَ فَلَمْ يَمْنَعْنِى أَنْ أَكُونَ دَخَلْتُ عَلَيْكَ الْبَيْتَ الَّذِى كُنْتَ فِيهِ إِلاَّ أَنَّهُ كَانَ فِى بَابِ الْبَيْتِ تِمْثَالُ الرِّجَالِ وَكَانَ فِى الْبَيْتِ قِرَامُ سِتْرٍ فِيهِ تَمَاثِيلُ وَكَانَ فِى الْبَيْتِ كَلْبٌ فَمُرْ بِرَأْسِ التِّمْثَالِ الَّذِى بِالْبَابِ فَلْيُقْطَعْ فَيَصِيرَ كَهَيْئَةِ الشَّجَرَةِ وَمُرْ بِالسِّتْرِ فَلْيُقْطَعْ وَيُجْعَلْ مِنْهُ وِسَادَتَيْنِ مُنْتَبَذَتَيْنِ يُوَطَآنِ وَمُرْ بِالْكَلْبِ فَيُخْرَجْ فَفَعَلَ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- وَكَانَ ذَلِكَ الْكَلْبُ جَرْوًا لِلْحَسَنِ أَوِ الْحُسَيْنِ تَحْتَ نَضَدٍ لَهُ فَأَمَرَ بِهِ فَأُخْرِجَ
قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ. وَفِى الْبَابِ عَنْ عَائِشَةَ وَأَبِى طَلْحَةَ
হযরত আবু হুরায়রা রা. বলেন, রাসূল সা. বলেছেন, আমার নিকট জিব্রীল আ. এসে বললেন, একটু আগে আমি আপনার কাছে এসেছিলাম কিন্তু আপনার কাছে আপনার ঘরে আমাকে প্রবেশ করতে বিরত রেখেছিল ঘরের দরজায় থাকা মানুষের প্রতিমূতি, ঘরের ভিতরে থাকা ছবি যুক্ত পর্দা এবং কুকুর। সুতরাং আপনি দরজায় থাকা প্রতিমূর্তির ব্যাপারে নির্দেশ দিন যেন কেটে ফেলা হয় তখন সেটা গাছের আকৃতির মত হয়ে যাবে। আর পর্দার ব্যাপারে নির্দেশ দিন যেন তা কেটে ফেলা হয় এবং পাপোশ বানানো হয়। আর কুকুরটিকে বের করতে বলেন। তখন রাসূল সা. তা করলেন। আর কুকুরটি ছিল হাসান বা হুসাইনের, সেটি তাদের খাটের নিচে ছিল। তিনি তা বের করার নির্দেশ দিলেন আর তা বের করা হল। সুনানে তিরমিযী, হাদীস নং ২৮০৬। ইমাম তিরমিযী বলেছেন, হাদীসটি হাসান সহীহ আর শাইখ আলবানী বলেছেন, সহীহ। এই হাদীসটিতে সুস্পষ্ট যে ইবাদতের নিয়তে কিংবা ভ্রান্ত বিশ্বাস ছাড়াও কোন মূর্তি বা পুতুল রাখা যাবে না। কেননা উক্ত ঘরে কোন মূর্তি ইবাদতের জন্য বা ভ্রান্ত বিশ্বাসে যে রাখা হয়নি এটা বলার অপেক্ষা রাখে না। উপরের হাদীসগুলোর ভিত্তিতে আলেমগণ একমত যে, যে কোন প্রাণীর এবং মানুষের যে কোন ধরনের পুতুল বা মূর্তি রাখা বা বানানো হারাম। সুতরাং আপনার জন্য জায়েজ হবে না সেগুলো প্রদর্শন করা। তবে পুতুলের মুখের স্থানটি যদি সমান হয় অথবা মুখ না থাকে তাহলে সমস্যা নেই।কিন্তু এই মূর্তি থাকার কারণে মূল ব্যবসা হারাম হবে না। এই ধরনের গুনাহর কাজ থেকে আমাদের বিরত থাকতে হবে। আল্লাহ ভাল জানেন।
প্রশ্নঃ 5
আসসালামুয়ালাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লা...এলাকায় একধরনের লোন প্রচলিত আছে কেউ এক বছরের জন্য ১ লাখ টাকা দিলে তাকে ১ বছর পর ১লাখ ২৫ হাজার টাকা ফেরত দিতে হয়,কখনো অতিরিক্ত ২৫ হাজার টাকা লোন দেবার সময় কেটে নেয়া হয় অর্থাত ১ লাখ টাকা না দিয়ে অতিরিক্ত ২৫ হাজার টাকা কেটে ৭৫ হাজার টাকা দেয়া হয় সেটাকে এলাকায় খাজনা বলে থাকে। প্রচলিত এই লোন ব্যক্তি পর্যায়ে আদান প্রদান হচ্ছে। কুরআন ও হাদিসের আলোকে জানতে চাই
20 Dec 2025
ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ। উল্লেখিত লেনদেন এক কথায় হারাম। কারণ এটা সুদ। নিচে দলীল সহ বিস্তারিত বিবরণ দেয়া হলো:
এই লেনদেনটি যেহেতু সুদ তাই প্রথমে সুদ সম্পর্কে আমাদের জানতে হবে। সুদকে আরবীতে রিবা বলে। যার আভিধানিক অর্থ হচ্ছে অতিরিক্ত বা বেশী। ইসলামী পরিভাষায় সুদের অর্থ:
আল্লামা আব্দুল আযীয বিন বায বলেন,
هو الزيادة في أحد النوعين من المال على النوع الآخر، هذا إذا كانا من جنس واحد، كالذهب بالذهب والفضة بالفضة والبر بالبر والشعير بالشعير ونحو ذلك، إذا زاد أحدهما على الآخر يقال له ربا، شرع
অর্থাৎ লেনদেনের সময় একজাতীয় পণ্যের একটিকে আরেকটির তুলনায় বেশী দেয়া। যেমন, সোনার বিনিময়ে সোনা, রুপার বিনিমেয়ে রুপা, ....যখন একটিকে আরেকটির চেয়ে বেশী দেয়া হবে তখন তাকে সুদ বলা হবে। আল্লামা আবুল বারাকাত আন-নাসাফী আল হানাফী বলেন, فَضْلُ مَالٍ بِلَا عِوَضٍ فِي مُعَاوَضَةِ مَالٍ بِمَالٍ অর্থাৎ পণ্য লেনদেনের সময় বিনিময় ছাড়া অতিরিক্ত পণ্যই সুদ। আল্লামা আব্দুল্লাহ ইবনে মাহমুদ আলমাউসুলি আল হানাফী বলেন,
الزيادة المشروطة في العقد ، وهذا إنما يكون عند المقابلة بالجنس
অর্থাৎএক জাতীয় পণ্যের বিনিময়ের চুক্তিতে শর্তকৃত অতিরিক্ত অংশ হলো সুদ। মোট কথা সোনা-রুপা, টাকা-পয়সা বা শস্য ইত্যাদির বিনিময়কালে কম-বেশি দেয়া নেয়াই হলো সুদ। এ থেকে আমরা জানতে পারছি যে, কাউকে টাকা, সোনা, রূপা ইত্যাদি প্রদান করে পরে তার থেকে প্রদত্ত পরিমানের চেয়ে বেশি টাকা, সোনা, রূপা ইত্যাদি গ্রহণ করাই সূদ। কাউকে ১ হাজার টাকা দিয়ে তার কাছ থেকে ১ হাজার ১ টাকা নিলে এক টাকা সূদ বলে গন্য হবে। উপরে দেলনদেনে ৭৫ হাাজার টাকা দিয়ে ১ লক্ষ টাকা নেওয়া হচ্ছে। অতিরিক্ত ২৫ হাজার টাকা সুদ। অনুরূপভাবে এক লক্ষ টাকা দিয়ে পরে তার থেকে এক লক্ষের বেশি যে টাকাই নেওয়া হোক না কেন তা ইসলামী শরীয়াতে সূদ বলে গণ্য। সুদের সম্পর্কে ধারণা দিতে গিয়ে আবু সাইদ খুদরী (রা.) থেকে বর্ণিত হাদীসে রাসূল (সা.) বলেছেন,
الذَّهَبُ بِالذَّهَبِ وَالْفِضَّةُ بِالْفِضَّةِ وَالْبُرُّ بِالْبُرِّ وَالشَّعِيرُ بِالشَّعِيرِ وَالتَّمْرُ بِالتَّمْرِ وَالْمِلْحُ بِالْمِلْحِ مِثْلاً بِمِثْلٍ يَدًا بِيَدٍ فَمَنْ زَادَ أَوِ اسْتَزَادَ فَقَدْ أَرْبَى الآخِذُ وَالْمُعْطِى فِيهِ سَوَاءٌ
অর্থ: সোনার বিনিময়ে সোনা, রুপার বিনিময়ে রুপা, গমের বিনিময়ে গম, জবের বিনিময়ে জব, খেজুরের বিনিময়ে খেজুর এবং লবণের বিনিময়ে লবন বিক্রি করবে সমান সমান নগদ নগদ। সুতরাং যে বেশী গ্রগন করবে কিংবা প্রদান করবে সে সুদী কারবার করল। দাতা ও গ্রহীতা এক্ষেত্রে সমান। উল্লেখ্য যে, তখনকার সময় সোনা-রুপাই ছিল মুদ্রা। হযরত আবু হুরাইরা রা. এবং আবু সাঈদ খুদরী রা. থেকে বর্ণিত তার বলেন,
أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم اسْتَعْمَلَ رَجُلاً عَلَى خَيْبَرَ فَجَاءَهُ بِتَمْرٍ جَنِيبٍ ، فَقَالَرَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم كُلُّ تَمْرِ خَيْبَرَ هَكَذَا فَقَالَ : لاَ وَاللَّهِ يَا رَسُولَ اللهِ إِنَّا لَنَأْخُذُ الصَّاعَ مِنْ هَذَا بِالصَّاعَيْنِ {وَالصَّاعَيْنِ} بِالثَّلاَثَةِ فَقَالَ : لاَ تَفْعَلْ بِعِ الْجَمْعَ بِالدَّرَاهِمِ ثمَّ ابْتَعْ بِالدَّرَاهِمِ جَنِيبًا
রাসূল সা. খয়বারে এক ব্যক্তিকে জাকাত আদায়ের জন্য নিযুক্ত করলেন। সে তাঁর নিকটে উৎকৃষ্টমানের খেজুর নিয়ে আসলো। রাসূল সা. বললেন, খয়বারের সব খেজুর কি একই মানের? সে বলল, আল্লাহর শপথ হে আল্লাহর রাসূল! না, বিষয়টি এমন নয়। আমরা উন্নতমানের খেজুরের এক সা বিক্রি করি নিম্নমানের খেজুরের দুই সা এর বিনিময়ে এবং দুই সা কে তিন সা এর বিনিময়ে। রাসূল সা. বললেন, তুমি এমন করবে না।নিম্নমানের খেজুর বিক্রি করবে দিরহাম দ্বারা এরপর উন্নতমানের খেজুর ক্রয় করবে দিরহাম দ্বারা। সহীহ বুখারী: হাদীস নং ৪২৪৫। উবাদা ইবনে সামেত, উমার (রা.) সহ আরো অনেক সাহাবী থেকে এই অর্থের অনেক হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীস অনুধাবনের জন্য একটি উদাহরণ দেখুন। মনে করুন বাজারে খুব ভাল চাউল ৬০ টাকা এবং কমা চাউল ৪০ টাকা। তাহলে তিন কেজি কমা চাউল বিক্রয় করলে ২ কেজি ভাল চাউল কেনা যায়। কিন্তু ক্উে যদি ক্রয় বিক্রয় না করে সরাসরি তিন কেজি কমা চাউল দিয়ে দুই কেজি ভাল চাউল গ্রহণ করে তবে এক কেজি সূদ বলে গণ্য হবে। ইসলাম বাজারে ক্রয়বিক্রয়ে ধারা বৃদ্ধি করতে উৎসাহ দেয়। কোনো অজুহাতেই সূদ গ্রহণ বৈধ করে নি। এই সব হাদীসের ভিত্তিতে সমস্ত আলেম একমত যে, মুদ্রার বিনিময়ে মুদ্রা (যদি এক জাতীয় হয়) কমবেশী করে বিনিময় করা হারাম। আর টাকা যেহেতু মুদ্রা তাই টাকার ক্ষেত্রেও কমবেশী করে বিনিময় হারাম হবে। সুতরাং একলক্ষ টাকা দিয়ে পরবর্তীতে এর চেয়ে বেশী নেয়া নিঃসন্দেহ সুদ। এটা পরিহার করতে হবে। সুদের ভয়াবহাতা সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন,
الَّذِينَ يَأْكُلُونَ الرِّبَا لاَ يَقُومُونَ إِلاَّ كَمَا يَقُومُ الَّذِي يَتَخَبَّطُهُ الشَّيْطَانُ مِنَ الْمَسِّذَلِكَ بِأَنَّهُمْ قَالُواْ إِنَّمَا الْبَيْعُ مِثْلُ الرِّبَا وَأَحَلَّ اللَّهُ الْبَيْعَ وَحَرَّمَ الرِّبَا فَمَن جَاءَهُ مَوْعِظَةٌ مِّن رَّبِّهِ فَانتَهَىَ فَلَهُ مَا سَلَفَ وَأَمْرُهُ إِلَى اللَّهِ وَمَنْ عَادَ فَأُوْلَئِكَ أَصْحَابُ النَّارِ هُمْ فِيهَا خَالِدُونَ (২৭৫)
অর্থ: যারা সুদ খায়, তারা কিয়ামতে দন্ডায়মান হবে সেভাবে, যেভাবে দন্ডায়মান হয় ঐ ব্যক্তি, শয়তান যাকে মোহবিষ্ট করে দেয়। তাদের এ অবস্থার কারণ এই যে, তারা বলেছে, ক্রয় বিক্রয় ও তো সুদেরই মত! অথচ আল্লাহ তায়ালা ক্রয় বিক্রয় বৈধ করেছেন এবং সুদ হারাম করেছেন। অতঃপর যার কাছে তার পালনকর্তার পক্ষ থেকে উপদেল এসেছে এবং বিরত হয়েছে, যা পূর্বে হয়ে গেছে তা তার এবং সেই বিষয়টি আল্লাহ তায়ালার জিম্মাই। আর যারা পূনরায় সুদ খাবে তারা জাহান্নামে যাবে। সূরা বাকারাহ, আয়াত ২৭৬। হযরত জাবির রা. বলেন,
لَعَنَ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- آكِلَ الرِّبَا وَمُوكِلَهُ وَكَاتِبَهُ وَشَاهِدَيْهِ وَقَالَ هُمْ سَوَاءٌ.
রাসূল সা. সুদ দাতা, গ্রহীতা, লেখক, সাক্ষীদ্বয় সবার উপর লানাত দিয়েছেন এবং বলেছেন, তারা সবাই সমান। সহীহ মুসলিম, ৪১৭৭। আল্লাহ আমাদের যাবতীয় হারাম কাজ থেকে বেঁেচ থাকার তাওফীক দান করুন।

কপিরাইট স্বত্ব © ২০২৫ আস-সুন্নাহ ট্রাস্ট - সর্ব স্বত্ব সংরক্ষিত| Design & Developed By Biz IT BD